‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়, কিন্তু ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না’

আবদুল কাদের খান

কি বিস্ময়কর! বারবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। ইংরেজিতে বললে দাঁড়ায়, ‘History repeats itself ’ কথাগুলো বলতে হলো নানা কারণে। কোন এক দার্শনিক বলেছেন, “আমরা শুধু ইতিহাস আওড়াই, কিন্তু ইতিহাস থেকে কেউই শিক্ষা গ্রহণ করি না।”

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ৫৪ বছর পার হতে চললো। আমরা ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষাই নিতে পারলাম না। এটা যেন একটা পরিহাস!

১৯৬৮ সালের কথা। সবেমাত্র কলেজে প্রবেশ করেছি। যেমন তেমন কলেজ নয়, শতাব্দীর সেরা বিখ্যাত কলেজ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ছড়িয়ে আছে। নাম বি.এল. কলেজ। চিন্তে পারলেন না? বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলীয় শহর খুলনার অদূরে দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজ।

মাত্র ১৬ বছরের তরুণ, গ্রাম ছেড়ে শহরে এলাম। জলের মাছ ডাঙ্গায় তোলার মত। কী যে অবস্থা! একদিকে নাড়ির নিবিড় বন্ধন গ্রামে। শৈশব- কৈশোরের সোনালি দিনগুলো গ্রামেই কাটিয়েছি। হঠাৎ মায়ের কোল, স্মৃতিময় গ্রাম ছেড়ে, স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আবির্ভূত হওয়ার মত অবস্থা, আর কি!

পহেলা আগস্ট, ১৯৬৮ সাল। বিএল কলেজের প্রবেশ দ্বারে পা রেখেই আন্দোলন রাজনীতির গন্ধ পেলাম। সরকারি কলেজ সত্ত্বেও বুঝলাম, রাজনীতি চর্চা খুব উত্তপ্তভাবে চলে। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৮ এক বছর মাত্র কলেজটি সরকারি হয়েছে। সরকারি কলেজ হওয়া সত্ত্বেও রাজনীতি চলে সরগরমভাবে। কয়েকটি সমাবেশ মিছিল মিটিং দেখে বুঝে ফেললাম ।

প্রথম বর্ষ। কলেজে ঢুকেই জানতে পারলাম আইয়ুব হটাও আন্দোলন চলছে। গ্রামে বেড়ে ওঠা তরুণ বালক-এ আন্দোলন দেখে কিছুটা বিস্মিত হলাম! সে কি তাজ্জব কথা! আমাদের পূর্ব পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব খানকে ওরা কেন হটাতে চায়! মাত্র ২০/২১ বছর আগের কথা ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান আর হিন্দুস্থান দু’টি পৃথক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে! পাকিস্তানের পূর্ব অঞ্চলের নাম পূর্ব পাকিস্তান। আমরা এই অঞ্চলের বাসিন্দা। তারই গভর্নর মোনেম খান, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। বেশতো চলছে পাকিস্তান, অথচ এমন গুণধর ব্যক্তিকে কেন বলা হচ্ছে, “স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান নিপাত যাক।” প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান নামক ভদ্রলোক সম্পর্কে যতদূর জানতে পারলাম, তিনি একজন স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল। জেনারেল আইউব খান। ইতোমধ্যে লোকদের দিয়ে একখানা বইও লিখিয়েছেন, ‘প্রভু নয় বন্ধু’ ‘Friends not Master’ এত গুণী মানুষ! অথচ তার এই দশা কেন? গ্রাম-গাঁওয়ের ছেলে অত শত রাজনীতি কি বুঝি! তাই বিষয়টি উপভোগ করতে থাকলাম। সময় গড়াতে থাকলো, আন্দোলনও বেগবান হয়ে উঠলো।

উপমহাদেশের সকল আন্দোলন রাজনীতির সূতিকাগার বিএল কলেজে শ্রেণি পাঠদানের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ দক্ষ শিক্ষকদের পাশাপাশি রাজনীতি চর্চায় কম যায় না। আবেগি বয়েস, আস্তে আস্তে জানলাম, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের যেকোনো আন্দোলন সংগ্রাম কোন কিছু প্রধান শহর ঢাকাতে শুরু হলে, তার আঁচ দৌলতপুর বিএল কলেজে অবশ্যই লক্ষ্য করা যাবে। ব্যারোমিটারের তাপমাত্রার মত মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে, এই কলেজ। যখন তখন উত্তাল সংগ্রামে ফেটে পড়বে।

যে কথা বলছিলাম, কলেজে ঢুকে কয়েকদিনের মধ্যে জানতে পারলাম, স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব খান বাইরে ভালো মানুষের আড়ালে একজন কুখ্যাত সামরিক ডিক্টেটর। শুধু সামরিক ডিক্টেটর নন, প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের এক খলনায়ক। পূর্ব বাংলার অর্থাৎ আমাদের পূর্ব পাকিস্তানের সকল বৈষম্যের মূলে তিনি একজন নিষ্ঠুর সামরিক শাসক। একজন ডিক্টেটর। কর্তৃত্ব পরায়ণ ব্যক্তি। দীর্ঘকাল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার নিজের তৈরি ধূর্ত মানসিকতার ফসল তথাকথিত ‘Basic democrac’ বা মৌলিক গণতন্ত্র। বেশ অদ্ভুত এই গণতন্ত্র।

চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য উনি দেশের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দিয়েছেন। সেখান থেকে যারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন তারাই গণপরিষদ সদস্য নির্বাচন করবেন। গণপরিষদ সদস্য নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গটি কোনো কমেই থাকবে না। কি বিচিত্র ব্যবস্থা!

সম্ভবত ১৯৫৮ সালের কথা। উনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জাকে নিজেই সেনা প্রধান হিসেবে অস্ত্রের মুখে দেশ থেকে বিতাড়িত করার পর প্রায় নয় বছরের মাথায় একটি নির্বাচন দেন। বাকি সময়টি কাটিয়েছেন কোনো প্রকার গণরায় ছাড়া!

প্রতিদ্বন্দ্বী দু’জন ফাতেমা জিন্নাহ এবং আইয়ুব খান। বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার। ফাতেমা জিন্নাহ হচ্ছেন ৪৭ এ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্রয়াত মোহাম্মদ আলি জিন্নার ছোট বোন এবং উনি নিজে। হারিকেন মার্কা বনাম গোলাপ ফুল মার্কা। ফাতেমা জিন্নাহ আর ক্ষমতাসীন আইয়ুবের মধ্যে নির্বাচন নির্বাচন অভিনয় হয়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন আইয়ুব খান। ফাতেমা জিন্নাহ চলে যান নিবিড় অন্ধকারে।

আইয়ুব খান ক্ষমতায় আসার পর জনগণের কাছে বার্তা পৌঁছালেন, মৌলিক গণতন্ত্রের মাধ্যমে তিনি দেশের মানুষের উন্নয়ন ঘটাবেন। জনগণ তার ধূর্তামি বুঝতে পারল না। উনার সাফ সাফ কথা, জনগণ ভোগ করবে মৌলিক গণতন্ত্র অর্থাৎ তার পাতানো গণতন্ত্র। আর উনি চান দেশের উন্নয়ন। প্রহসনের রাজনীতির কারিগর হিসেবে জ্বি হুজুর, হ্যাঁ হুজুর মার্কা বেশ কিছু লোকও পেয়ে গেলেন। ফলে শোষণ লুণ্ঠনে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত পাক্কা এক দশক দেশের মানুষকে জিম্মি করে তিনি চালালেন একতরফা শোষণ লুণ্ঠন। তার সীমাহীন শোষণ লুণ্ঠনে বাংলার মানুষ অত্যাচারিত নির্যাতিত হতে থাকলো।

পূর্ব বাংলা অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানকে তিনি অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা সবদিক দিয়ে পঙ্গু করে রেখে ভিন্নমতের বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের কারারুদ্ধ করে রাখলেন। দেশে তার উন্নয়নের মহড়া চললো বিভিন্নভাবে। ডোবা পুকুরের কচুরিপানা ধ্বংস, নারীদের নাভির উপরে কাপড় পরলে শাস্তির ব্যবস্থা এসবের মাধ্যমে। বলা বাহুল্য, আইয়ুব খান বৈষম্য পীড়িত এই অঞ্চলে তার শাসন কায়েমে পুরো এক দশক স্টিমরোলার চালানোর ফলে উত্তপ্ত হলো এ অঞ্চল।

উনি যখন ইস্কান্দার মির্জাকে হটিয়ে দিয়ে স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হলেন, সেও এক বিচিত্র ইতিহাস! তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইস্কান্দার মির্জাকে সঙ্গীনের ডগায় অর্থাৎ অস্ত্রের মুখে প্লেনে তুলে দেন ১৯৫৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা চিরদিনের জন্য পাকিস্তান থেকে লন্ডনে নির্বাসিত হন। আর তার ফেরা হয়নি। এই তথাকথিত মহামানব! সামরিক ডিক্টেটর ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব খান ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত এক দশক বেশ দর্পের দম্ভের সাথে দেশ চালান! এমনকি ১৯৬৮ সালের আগস্টে ঘটা করে উন্নয়ন দশকও পালন করেন।

প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল জেনারেল আইয়ুব খান পাকিস্তানের স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পশ্চিম পাকিস্তান মরুভূমির দেশ হওয়া সত্ত্বেও তার হাতের ছোঁয়ায় হয়ে উঠলো গোলাপ বাগান। শিক্ষা সামরিক প্রতিরক্ষা সবদিক দিয়ে বাঙালিকে কোণঠাসা করে বঞ্চিত করে রাখা হলো। রাষ্ট্রীয় বাজেটের প্রায় সত্তর থেকে আশি পার্সেন্ট পাকিস্তানের পশ্চিম অঞ্চলে ব্যয় করা হতো। পূর্ব পাকিস্তানে নামমাত্র উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ব বাংলার মানুষকে উত্তেজিত করে তুললো। চাকরি ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চল যে সুবিধা পেত পূর্বাঞ্চলে তার ছিটেফোটাও না পড়ায় জনরোষ বেড়ে গেল ক্রমশ আন্দোলন ঘনীভূত হল।

১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন এই আইউব শাহীর শাসন আমলে গড়ে ওঠে। একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন দিতে হলো একগুচ্ছ তরুণ ছাত্রকে। হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিল করতে সরকারের রোষানলে পড়ে তরুণ আন্দোলনকারী ছাত্ররা। জীবন গেল মনু মিয়া আমির হোসেনের।

একই ধারাবাহিকতায় আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন শেষ পর্যন্ত রক্তমাখা শার্ট ৬৯ এর ২৪ জানুয়ারি আসাদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে সারা পূর্ব পাকিস্তানে গণঅভ্যুত্থানের জোয়ার বইয়ে দেয়। তারপরের ইতিহাস অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। ১৯৬৯ এর ২৩ মার্চ রাতে অশ্রুসজলভাবে এক সংক্ষিপ্ত বেতার টিভি ভাষণের মাধ্যমে সামরিক শাসক ডিক্টেটর আইয়ুব খান তারই এক বশংবদ জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেন। একই রকম ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করলাম প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর, একইসাথে একই ধারায়, একই প্যাটার্নে। বক্তৃতার সম্রাট শাসক শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনার কাছে।

মিথ্যাবাদী, কর্তৃত্বপরায়ণ, নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনে বাংলাদেশ পুরো দেড় দশক সময় একটি ঘৃণ্য বন্দিশালায় রূপান্তরিত হয়। খুন, গুম, অপহরণ, ক্রসফায়ার, কারাগারে গায়েবি মামলায় নির্যাতন সব ধরনের নিষ্ঠুর পৈশাচিক আচরণ করে নিজে নিজেই হুংকার দিয়ে বলতো, ‘এদেশে কোন জঙ্গি দুর্বৃত্তের ঠাঁই হবে না!’ তার নিষ্ঠুর একগুঁয়েমী আচরণের প্রতিবাদ করার কারণে নিজস্ব প্রাইভেট বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো ভিন্নমতের মানুষগুলোকে। বাংলাদেশ নামক এ অঞ্চলটি তার পৈতৃক জমিদারির ভূখ- হয়ে উঠেছিল।

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাছরাঙা টেলিভিশনের মেধাবী বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার এবং তার সহধর্মিনী আপোষহীন অনুসন্ধানী সাংবাদিক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয় সেই প্রাইভেট বাহিনী দিয়ে। যার ফলে এই ঘৃণ্য শাসকের শাসনামলে ওই দুই কৃতি সাংবাদিক হত্যার বিচারে ১০০ বার তারিখ বদলেছে, কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি।

পিলখানা হত্যাকা-। দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যা। তাদের স্ত্রীদের ধর্ষণ। তাদের অর্থ কড়ি লুণ্ঠন করা হলো, অথচ আজও তা ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ নামে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃত্ব পরায়ণ নিষ্ঠুর শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৫-১৬ বছরের স্বৈরশাসন আমলে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক পতিত নক্ষত্র কুখ্যাত আইয়ুব এর মত নিজেও তার চাটুকার দালাল সাংবাদিকদের ব্যবহার করে স্বঘোষিত “মাদার অফ হিউম্যানিটি” সেজেছিলেন। সেখানেই শেষ নয়, পিতার জীবন ইতিহাস রচনার নামে এক কুখ্যাত পুলিশ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে বাপবেটির তথাকথিত সুকৃতির আমলনামা তৈরি করেছিলেন। ২০২৪ এ ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ একটি সরকার গঠন করে জনগণের উপর ২০৪১ পর্যন্ত শাসন জুলুমের একটি সুপরিকল্পিত নীল নকশা তৈরি করেছিলেন।

কিন্তু তার নিয়তি বড্ড খারাপ হলো : খুন,গুম, অপহরণ, দেশের সম্পদ নির্লজ্জভাবে লুণ্ঠনের পর আদালত, প্রশাসন জিম্মি করে, যা ইচ্ছে তাই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের নিষ্ঠুর নিয়মে ১৬ জুলাই থেকে পাঁচই আগস্ট ২০২৪ সকাল পর্যন্ত নির্বিচার গণহত্যা চালিয়ে নিজে ভয়ংকর দানবে পরিণত হয়েছিলেন। দেশে তিন বাহিনী প্রধানসহ পুলিশ প্রধানকে মারণাস্ত্র, জীবনঘাতি বুলেট ব্যবহার করতে বলেন। কিছুকাল ব্যবহার হল। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। একে একে সবাই অপারগতা প্রকাশ করলেন। প্রবল গণঅভ্যুত্থানের মুখে মাত্র ৪০ মিনিট সময় পেয়েছিলেন। নিরাপদে দেশ থেকে পালিয়ে কোনো মতে পৈতৃক প্রাণ বাঁচান।

অনেকে বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কাছে হিটলার, চেঙ্গিস, কালাপাহাড়, হালাকু নাদির শাহের সাথে তুলনা করলে ম্রিয়মাণ হয়ে যাবে।

এইজন্য বলছিলাম, “ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়, ইতিহাস সবাই আওড়ায়, কিন্তু ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।” এ ভূখ-ের রাজনীতি সম্পর্কে যেদিন সঠিক গবেষণা হবে, সেদিন হাসিনার উত্থানের ব্যাপারে কারা কারা ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করেছিল যমজ সন্তানের মত হাসিনা, এরশাদ, গোলাম কাদের, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু এই জাতিকে প্রতিবেশী একটি দেশের ইশারায় চরম ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছিল, তা অবশ্যই দৃশ্যমান হবে।

তরুণ প্রজন্মের ২৪ এর ৩৬ জুলাই অভ্যুত্থান থেকে আমরা একটি কথা উপসংহার হিসেবে বলতে পারি যে, এদেশে আর কোন আধিপত্যবাদী, কর্তৃত্বপরায়ণ শাসক তাদের নিজেদের তৈরি করা সংবিধানের মাধ্যমে, কোটি কোটি মানুষের চোখে ঠুলি দিয়ে দেশকে নির্বিচারে লুণ্ঠন করতে, দেশের মানুষকে জুলুম করতে এবং বছরের পর বছর গুম অপহরণ ও গণহত্যা চালাতে পারবে না। যেখানে এ ধরনের কিছু হবে, সেখানেই সচেতন যুব তারুণ্য কথা বলে উঠবে, জ্বলে উঠবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, জীবন দেয়া নেওয়ার আসরে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন